শুক্রবার ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ শুক্রবার

‘এত বড়মাপের শিল্পী বিনা চিকিৎসায় মরতে পারেন না’

তানভীর তারেক: এদেশের শুদ্ধ সঙ্গীতের অনন্য নাম তপন চৌধুরী। নিয়মিত বাংলা গানের সাথে নিবিষ্ট থেকেছেন গোটা জীবন। দেশ-বিদেশে গান নিয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন শ্রোতা-দর্শকদের মাঝে। আসছে ঈদের ব্যস্ততা ও বাংলা গানের এ সময়ের ইউটিউব ইন্ডাস্ট্রি প্রসঙ্গে কথা বললেন বিনোদন প্রতিদিনের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তানভীর তারেক

কেমন আছেন?

গান নিয়েই আছি। গান নিয়ে থাকলেই ভালো থাকি। কিছুদিন আগে কানাডায় দারুণ একটা শো করলাম। অনুষ্ঠান শেষে এক তরুণী ব্যাকস্টেজে আমার টানা কয়েকটি গান মুখস্থ গেয়ে শোনালো। আমি মুগ্ধ হয়ে নিজের গানগুলো ওর কণ্ঠে শুনলাম। অথচ গানগুলোর জন্ম মেয়েটির জন্মেরও আগে। তখন মনে হয় জীবনের অনেক পাওয়া… গানের প্রতি আমার হাজার জনমের ঋণ। গান নিয়েই বেঁচে থাকলে আরও যুগ যুগ বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে।

দেশের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি তো এখন ইউটিউব বা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অ্যাপসের মাধ্যমে গ্লোবাল ভিলেজে প্রবেশ করেছে। সেদিক দিয়ে আপনাদের কালোত্তীর্ণ গানগুলো নিয়ে কিছু কাজ করা কী জরুরি নয়?

আমি তো মনে করি জরুরি। তবে এসব কাজ তো আর শিল্পীরা ভাববেন না। শিল্পীদের কাজ গান গাওয়া। সেটার ডিস্ট্রিবিউশন বা যাবতীয় অনেক দায়িত্ব কিন্তু প্রতিষ্ঠানের। প্রশ্ন তোলা ভালো সে ধরনের প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশে কতগুলো? তবে এখন আবারও ইউটিউবভিত্তিক গানের বিপণন শুরু হয়েছে। এটা একটা বড় দিক। আশা করছি নতুন করে আবারও সেই গানগুলো আমাদের পর পরের প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যাবে।

এই যে দেশ ও দেশের বাইরে জীবনের নানা সময় কাটানো, বাংলা গানের প্রতিনিধি হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা বলবেন কী?

আমরা তো প্রতিনিধি হয়েই কাজ করে যাচ্ছি। আর দেশের বাইরে থাকলেও আমি মোটেই একটি দিনের জন্যও বাংলা গান থেকে বাইরে নই। দেশের যেকোনো উত্সবে চলে আসি নিজের তাগিদেই। একজন শিল্পীর কাছে তার স্টেজ আরাধনার জায়গা। ক্যারিয়ারের অর্ধশত বছরেও তাই মনে হয় এই তো সেদিন শুরু করেছিলাম। কারণ এই বাংলা আমাকে তপন চৌধুরী বানিয়েছে। আমি সারাবিশ্বের এই বাংলাদেশের তপন চৌধুরী হয়েই কিন্তু গাই। গেয়ে যাবো আমৃত্যু।

দেশের বাইরে থাকলে দেশের কোনটিকে খুব মিস করেন?

আড্ডা। প্রাণ খোলা আড্ডা, প্রাণের মানুষদের সাথে। ধরা যাক, আমি আর সুবীর দা যদি কোথাও আলাপে বসেছি, কখন দুপুর সন্ধ্যায় গড়িয়ে যায় আমি তা টের পাই না। প্রিয় মানুষগুলোকে তো এক জীবনে আমরা খুব বেশি সময় কাছে পাই না। দূরে থাকলে তো আরও না।

আমাদের কণ্ঠশিল্পী আব্দুল জব্বার অসুস্থ…

আমি নিজে খোঁজ নিয়েছি। এত বড়মাপের শিল্পী বিনা চিকিত্সায় মরতে পারেন না। আমি বিশ্বাস করি, এদেশের সংস্কৃতিমনা সরকার ও গানপাগল মানুষরা তাকে বিনা চিকিত্সায় মরতে দেবেন না।

শিল্পীদের সংগঠন বা শেষ বয়সের দারিদ্রতা প্রসঙ্গে আপনার কথা শুনতে চাই—

দেখুন, শেষ বয়সের দারিদ্র বা দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত, এ সবই কিন্তু দুর্ঘটনা। আমরা কেউই এর জন্য প্রস্তুত থাকি না। আর পেনশন বা শেষ জীবনের বীমা নিয়ে আমাদের নিজেদের অবস্থানে নিজেদেরকে সচেতন থাকতে হবে। আমাদের দেশটা আরও উন্নত হতেও তো সময় দিতে হবে। শুধু যে এই সঙ্কট শিল্পী সমাজে তা কিন্তু না। তবে আশার বিষয়, বর্তমানে দেশের শিল্পী কলাকুশলীদের নানা মাত্রিক সংগঠন গড়ে উঠেছে।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: বিনোদন

Leave A Reply

Your email address will not be published.