বৃহস্পতিবার ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ ২৮ মার্চ, ২০২৪ বৃহস্পতিবার

এত কম সময়ে এতখানি ওজন ঝরালেন যেভাবে সোনাক্ষী সিনহা

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: ‘আমি হিরো হতে এসেছি, সাইজ জিরো করতে নয়!’ একবার এক সাক্ষাতকারে নিজের অতিরিক্ত ওজন সম্পর্কে বলতে গিয়ে এমনটাই উত্তর দিয়েছিলেন সোনক্ষী। কিন্তু এখন দেখুন অতিরিক্ত ওজন ঝরিয়ে তিনি বলিউডের অন্যতম ফ্যাশন ও স্টাইল দিভা।

কয়েকদিন আগে সোনাক্ষী নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে যে ছবিটি পোস্ট করেছেন তা এক কথায় অসাধারণ। সাইজ জিরো না হলেও তিনি যে পরিমাণ ওজন ঝরিয়েছেন (৩০ কেজি), তা যে কাউকে অনুপ্রাণিত করতে পারে।

কিন্তু প্রশ্নটা হল এত কম সময়ে এতখানি ওজন ঝরালেন কীভাবে?

আমরা বাঙালিরা যেমন খেতে ভালবাসি, তেমনি সোনাক্ষীরও খাবারের ব্যাপারে বেশ দুর্বলতা ছিল। জাঙ্ক ফুড সামনে এলে কিছুতেই নিজেকে সামলাতে পারতেন না। খাবার বিষয়ে ছিল না কোনও নিয়ন্ত্রণও। ফলে তার ওজন এক সময়ে গিয়ে ঠেকেছিল প্রায় ৯০ কেজিতে। এই পরিমাণ ওজন কমানো মোটেও সহজ কাজ ছিল না। দিন-রাত মারাত্মক পরিশ্রম করতে করতে এক সময় হাঁপিয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু হাল ছেড়ে দেননি দাবাঙ্গ গার্ল খ্যাত এই বলিউড নায়িকা। তাই তো ফল পয়েছেন একেবারে হাতে নাতে।

কিন্তু আপনাদের কি জানা আছে একেবারে এক্সারসাইজ করতে নারাজ একটা মেয়েকে জিমমুখি করার ব্যাপারে কার হাত ছিল? কে আবার! সেই সাল্লু ভাই (সালমান খান)। তিনিই সেনাক্ষীকে মোটিভেট করতে শুরু করেন। বোঝান যে ওজন না ঝরালে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সাফল্য পাওয়া সম্ভব হবে না। এর পর পরই সালমান খানের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় শরীরচর্চা। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সোনাক্ষীকে।

ডায়েট চার্ট
ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস গরম জলে মধু এবং লেবুর রস মেশানো সরবত পান করেন খান সোনাক্ষী। এরপর ব্রেকফাস্টে সিরিয়াল, সঙ্গে লো ফ্যাট মিল্ক এবং ১ টা গমের পাঁউরুটি। লাঞ্চে তার পছন্দ ১ কাপ সবজির তরকারি এবং ২ টো রুটি। সঙ্গে কোনও কোনও দিন স্যালাড। বিকেলের দিকে একেবারেই ক্ষিদে সামলাতে পারেন না সোনাক্ষী। তাই তো শুটিং-এর ফাঁকে চলজলদি খেয়ে ফেলেন এক কাপ গ্রিন টি এবং এক বাটি ফল। আর রাতের মেনুতে থাকে হাফ কাপ ডাল, মিক্স ভেজিটেবল কারি, এক পিস চিকেন ব্রেস্ট অথবা গ্রিল্ড ফিশ।

এমন ডায়েট কেন? খালি পেটে গরম জলে লেবু এবং মধু মিশিয়ে খেলে শরীরে অন্দরে জমে থাকা টক্সিন বেরিয়ে যায়। সেই সঙ্গে বদহজম সহ একাধিক পেটের রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগই পায় না। অন্যদিকে, ব্রেকফাস্টে পরিবেশিত খাবারে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ডায়াটারি ফাইবার। এই সবকটি উপাদানই শরীরে গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখতে এবং হাড়কে মজবুত করতেও সাহায্য করে। লাঞ্চে থাকা সবজির কারি, রুটি এবং স্যালাডে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল এবং ডায়াটারি ফাইবার। আর বিকেলে খাওয়া একবাটি ফল শরীরে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস এবং ফাইবারের ঘাটতি দূর করে। প্রোটিন ছাড়া শরীরকে সচল রাখা সম্ভব নয়, তাই রাতের খাবারে থাকে হয় মুরগির মাংস নয়তো মাছ। তবে ভাববেন না কেবল মাত্র ডায়েটিং করেই ওজন কমানো সম্ভব। এক্ষেত্রে নিয়ম মেনে শরীরচর্চা করার দিকেও নজর দিতে হবে। তবেই ফল মিলবে।

ওজন কমাতে সোনাক্ষী আরও যে নিয়মগুলি মেনে চলেন
পরিমিত খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কতগুলি নিয়ম মেনে চলাও জরুরি। যেমন- ১. প্রতি ২-৩ ঘন্টা অন্তর অল্প অল্প করে খাবার খেতে হবে। ২. পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান জরুরি। ৩. সন্ধ্যা ৬ টার পর কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া চলবে না। ৪. ওজন বাড়াতে পারে এমন খাবার যতটা পারবেন কম খাবেন।

আর শরীরচর্চা
দিনে দুবার জিমে গিয়ে ওয়ার্কআউট করেন সোনাক্ষী। এক্ষেত্রে তার শরীরচর্চার তালিকায় থাকে কার্ডিও, ওয়েট ট্রেনিং, ফাংশনাল ট্রেনিং, হট যোগাসন, দৌড় এবং সাঁতার অথবা টেনিস। সোনাক্ষীর নিয়ম মেনে কি যে কারও পক্ষে ওজন হ্রাস করা সম্ভব? কার কত দ্রুত ওজন কমবে তা বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন- শারীরিক অবস্থা, বর্তমানে শরীরের ওজন, খাবার ধরন, শরীরচর্চার মাপকাঠি, শারীরিক কষ্ট করার ক্ষমতা এবং ওজন বৃদ্ধির পারিবারিক ইতিহাস। তবে খাবার এবং শরীরচর্চা হল ওজন হ্রাসের প্রথম দুটি পদক্ষেপ। তাই এই দুটি জিনিসের প্রতি প্রথমে নজর দিতে হবে। সেই সঙ্গে জীবনযাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তাহলেই দেখবেন ওজন কমতে একেবারেই সময়ই লাগবে না।

সূত্র: খুবসুরাতি ডটকম

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: বিনোদন

Leave A Reply

Your email address will not be published.